অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি কিভাবে রোজা করবে এবং হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় রোজা
অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি কিভাবে রোজা? করবে এবং হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় রোজা |
অসুস্থ ব্যক্তির রোজা
অসুস্থ ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা ভাঙতে পারবে। কিন্তু পরে সুস্থ হলে ভাঙা রোজাসমূহের কাজা করতে হবে। নিম্নবর্ণিত অবস্থায় রোজা না রাখা জায়েয।
১. রোগ বেড়ে যাবার আশংকা থাকলে।
২. রোগ দূরারোগ্য পর্যায়ে পৌঁছে যাবার আশংকা থাকলে।
৩. জীবনহানি হবার সম্ভাবনা থাকলে। রোজা সম্পর্কে নিজের খেয়াল ধারণা বা কল্পনাই যথেষ্ট নয়।
এ ব্যাপারে স্থিরনিশ্চিত হতে হবে। জানা প্রয়োজন যে-
১. দ্বীনদার চিকিৎসক যদি মত প্রকাশ করেন যে রোজা রাখলে ক্ষতি হবে, তখনই কেবল রোজা না রাখা যেতে পারে।
২. রোগী যদি তার বাস্তব অভিজ্ঞতা দ্বারা অথবা বার বার পরীক্ষা দ্বারা বুঝতে পারে যে, রোজা রাখলে অবশ্যই ক্ষতি হবে, তখনও রোজা ভাঙা যেতে পারে।
৩. শুধু ধারণা অভিজ্ঞতা নয়, তার সাথে মনেরও দৃঢ় সাক্ষ্য প্রয়োজন। তখনই কেবল রোজা ছেড়ে দেয়া যায়।
৪. দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামত ব্যতিরেকে রোজা ছাড়লে কাফ্ফারা দিতে হবে। গোনাহও হবে।
৫. যদি পীড়িত ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করে, তবে আখেরাতে সে দায়ী হবে না। কারণ, কাজা আদায়ের সুযোগ সে পায়নি।
৬. রোজা অবস্থায় কারো ১০টি রোজা বাদ পড়েছে। সে পূর্ণ সুস্থ হবার ৫ দিন পর হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলো। এখন তার জন্য ৫টি রোজা মাফ। কিন্তু বাকী ৫টি রোজার জন্য তাকে কেয়ামতে হিসাব দিতে হবে।
৭. রোগ আরোগ্যের পর ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর যদি প্রাণত্যাগ করে তবে ১০টি রোজার জন্যই জবাবদিহি করতে হবে।
৮. এরকম পরিস্থিতি অনুভব করতে পারলেই সেই ব্যক্তির উচিত যেনো বাদ পড়ে যাওয়া রোজার ফিয়া আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যায়। ফিয়া আদায়ের সামর্থ থাকা সত্ত্বেও যদি অসিয়ত না করে তবে সে গোনাহগার হবে ।
৯. গর্ভবতী রমণী রোজা রাখলে যদি তার পেটের সন্তানের অথবা নিজের জীবনের ক্ষতি হয় তবে রোজা ছেড়ে দিতে পারবে।
১০. সদ্যপ্রসূত শিশুর জীবনের আশংকা থাকলে স্তন্যদানকারিণী রোজা ছেড়ে দিতে পারবে। পরে এর কাজা করতে হবে।
১১. স্বামী যদি সম্পদশালী হয় এবং ধাত্রী নিযুক্ত করে শিশুর দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে, কিন্তু শিশু নিজ মাতা ছাড়া অন্য কারো দুধ মুখেই নেয় না। এ অবস্থায় মাতার জন্য রোজা ছাড়া জায়েয। পরে কাজা করতে হবে।
বার্ধক্যজনিত অবস্থায় রোজা
অতি বৃদ্ধ ব্যক্তি যারা রোজা রাখতে অসমর্থ এবং পরেও কাজা আদায় করতে সক্ষম নয় তাদের জন্য ফিদয়া দেয়ার বিধান আছে। এ সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন যে-
১. ফিদয়া দেয়ার পর যদি রোজা রাখার সামর্থ্য ফিরে পায় তবে রোজা রাখতে হবে। যদি কাজা করতে সক্ষম হয়, তবে কাজাও আদায় করতে হবে। এ অবস্থায় ফিয়ার হুকুম বাতিল হয়ে যাবে।
২. বৃদ্ধা স্ত্রীলোকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
৩. প্রথম রোজার সময় যদি একবারে সমস্ত রোজায় ফিয়া আদায় করা হয়, তবে তা জায়েয হবে। আবার রমজান শেষে একবারে সমস্ত রোজার ফিদয়া দিলেও জায়েয হবে।
হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় রোজা
হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত রমণীদের জন্য রোজা রাখা নিষেধ। এইসব কারণে বাদ পড়ে যাওয়া রোজা পরে সুস্থাবস্থায় কাজা করে নিতে হবে। এ সম্পর্কে আরো জেনে রাখা প্রয়োজন যে-
১. যদি কোনো মহিলার হিসাবে হায়েজ আসার কথা। এই ধারণায় সে রোজা রাখেনি। পরে দেখা গেলো তার হায়েজ আসেনি। তবে কাফ্ফারা আদায় করা তার জন্য ওয়াজিব হবে
২. যদি রাতে হায়েজ থেকে পবিত্র হয় এবং পূর্ণ ১০ দিন পরে পবিত্র হয়, তবে সকাল থেকেই রোজা থাকবে।
৩. যদি ১০ দিনের কমে পবিত্র হয়, তবে রাতে গোসল করবে। তারপর যদি ১ ঘন্টা রাত বাকী থাকে তবে রোজা রাখবে।
৪. যদি গোসল করার সঙ্গে সঙ্গেই ভোর হয়ে যায়, তবে রোজা রাখবে না। কেনোনা, হায়েজ যখন ১০ দিনের কমে হয় তখন গোসল করার সময়কেও হায়েজের মধ্যে ধরা হয়।
৫. রাতে যদি গোসল নাও করে তবু রাতে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলে সকাল থেকে রোজা রাখবে।
৬. ভোর হওয়ার পর রক্ত বন্ধ হলে রোজা জায়েয হবে না। কিন্তু রোজাদারের মতোই তাকে সারাদিন অতিবাহিত করা উচিত।
পোস্টে কোথাও ভুল ক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন সকল প্রকার টিপস এবং ট্রিক পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ট্রিকবিডিফ্রি TrickbdFree.com এর সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।